Princess Diana: A legend in our lifetime/Biography of Princess Diana in Bangla

Princess Diana 


তার কোলেই জন্ম নেয় রাজপরিবারের দুই উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি। আজীবন তিনি দেশ থেকে দেশে ছুটে বেড়িয়েছেন নানা সমাজসেবামূলক কাজে। দানশীলতার ব্যাপারে তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। তিনি আর কেউ নন, তিনি প্রিন্সেস ডায়না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্ল্যামারাস ডায়না ছিলেন আইকন। ফ্যাশন আইকন ডায়ানা ছিলেন তার সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্যামেরাবন্দি  হওয়া সেলিব্রেটি।

৩০০ বছরের ইতিহাসে প্রিন্সেস ডায়না হলেন প্রথমজন যিনি রাজপরিবারের উত্তরাধিকারীকে সরাসরি বিয়ে করেন। তার জন্ম ১ জুলাই, ১৯৬১সালে। রাজ পরিবারের সাথে তার পরিবারের সম্পর্ক ছিল বেশ আগে থেকেই। বাবা স্পেন্সার ও অষ্টম আর্ল স্পেন্সারের সন্তান ছিলেন প্রিন্সেস ডায়না।  বিয়ের আগে অনেকে তাকে লেডি ডায়না বলে ডাকতেন। তার আসল নাম ছিল ডায়না ফ্রান্সেস স্পেনসার। বিয়ের পর তাকে রয়েল 'হাইনেস দ্য প্রিন্সেস অব ওয়েলস' বলে ডাকা হতো। তবে প্রিন্স এর সাথে তার বিচ্ছেদের পরে রানীর একান্ত অনুমতিতে তাকে শুধু 'প্রিন্সেস অব ওয়েলস' ডাকা হতো।  

একটি প্রশ্ন থেকে যায়, রাজপরিবারের সদস্য না থাকা সত্ত্বেও কেন ডায়নাকে 'প্রিন্সেস ডায়না' বলে ডাকা হতো। অনেক রাজকীয় পর্যবেক্ষক এমন প্রশ্নের জবাবে উল্লেখ করেছিলেন যে ডায়ানা, প্রিন্সেস অফ ওয়েলস, রানির সরাসরি আত্মীয় ছিলেন না এবং এটি কখনও তার সরকারী খেতাব ছিল না, মূলত তার জনপ্রিয়তার কারণে জনগণ তাকে ভালোবেসে 'প্রিন্সেস ডায়না' বলে ডাকেন।এছাড়া যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার তাকে 'পিপলস প্রিন্সেস' নামে ভূষিত করেছিলেন।

ডায়না শৈশব থেকেই বেশ লাজুক স্বভাবের ছিলেন। একাডেমিক পড়াশোনায় তেমন কৃতিত্ব দেখাতে না পারলেও নাচ এবং ধর্মীয় গানে তিনি ছিলেন অতুলনীয়।শান্তশিষ্ট স্বভাবের কারণে তিনি বেশ মনোযোগী ছিলেন। শাস্ত্রীয় ও ধর্মীয় সঙ্গীত এবং নাচ দুটিতেই তিনি বেশ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তার গুণের অভাব ছিল না। সাত বছর বয়সেই তার বাবা মার বিবাহ  বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে তিনি লেখাপড়ায় তেমন মনোযোগ দিতে পারেননি। বেলে নাচের প্রতি তার তীব্র ভালোবাসা থাকা সত্বেও তিনি পরবর্তীতে এটিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেননি, কারণ তার উচ্চতা। তিনি বেশ লম্বা হওয়ায় তার এ নাচ করতে সমস্যা হতো।

ডায়না মাত্র ১৭বছর বয়সে আলেকজান্দ্রিয়ায় আয়া হিসেবে কাজ শুরু করেন। তারপর তিনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি হিসেবে কাজ নেন। এছাড়া রাজবধূ হবার আগে বিভিন্ন পার্টিতে পরিচারিকা হিসেবেও কাজ করেছেন। প্রিন্স চার্লস এর সাথে তার বিয়ের দৃশ্য একসাথে ৭৪ টি দেশে সম্প্রচার করা হয়, যা ৭৫০মিলিয়ন মানুষ উপভোগ করেছিল। ১৬ বছর পরে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মানুষ নজর রেখেছিল। 

বলা হয়ে থাকে, প্রিন্স চার্লস ডায়নার রূপে মুগ্ধ হয়ে প্রায় ৬ মাস প্রেম করার পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এসময় ডায়নার বয়স ছিল মাত্র ২০ বছর এবং প্রিন্স চার্লসের বয়স ছিল ৩২বছর ।

আবার এটিও শোনা যায় যে প্রিন্স চার্লস কখনো ডায়ানাকে বিয়ে করতে চাননি। শুধুমাত্র পারিবারিক চাপের মুখে প্রিন্স চার্লস বিয়ে করতে বাধ্য হন। প্রিন্স চার্লসের সাথে ক্যামিলা নামে একজন তরুণীর ডায়ানার সাথে বিবাহের পূর্ব থেকেই সম্পর্ক ছিল এবং বিয়ের পরবর্তীতেও প্রিন্স চার্লস ক্যামিলা এর সাথে সম্পর্ক রাখেন। আর তাই কখনোই প্রিন্স চার্লস এবং ডায়নার দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। তবে ডায়না সবসময়ই চেষ্টা করেছেন চার্লসের  ভালোবাসা পেতে।  তিনি মনে করেছিলেন সন্তান লাভের পর হয়তো চার্লস ঘরমুখো হবে। কিন্তু পরবর্তীতে এমনটি না হওয়ায় ভীষণ বিষন্ন ও ভগ্নহৃদয় ডায়না সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি বিচ্ছেদ গ্রহণ করবেন, আর একজন রাজবধূর পক্ষে এরূপ সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল প্রথম।

পর্ব -১

©️ তাসমীম বিনতে হক

Post a Comment

0 Comments